এবার বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির সরকারী বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম আজ ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) জেনারেল সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের (জিসিএএ) মহাপরিচালক সাইফ আল সুওয়াইদীর এক বিবৃতি উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এখন থেকে আমিরাতের সকল নাগরিকের জন্য বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানে চলাচল উন্মুক্ত করে দেয়া হলো।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানকে পুনরায় উড্ডয়ন করার অনুমতি দিয়েছে। এ ব্যাপারে দেশটির সরকারী বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) জেনারেল সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (জিসিএএ) মহাপরিচালক সাইফ আল সুওয়াইদীর এক বিবৃতি উদ্ধৃত করে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আল সুওয়াইদী আরো বলেছেন যে, ইউরোপীয় বিমান পরিবহন সুরক্ষা সংস্থার (ইএএসএ) প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সমস্ত প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়নের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তিগত কমিটি কর্তৃক করা নিবিড় প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ বিমানটিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাকার্তা বিমানবন্দর থেকে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের একটি ফ্লাইট আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আছড়ে পড়ে জাভা সাগরে। এর সাড়ে চার মাস পর ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান আকাশে উড়েছিল কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উদ্দেশ্যে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আদ্দিস আবাবা থেকে ৬২ কিলোমিটার দূরে এক শহরের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে। বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮’র এই দুইটি ফ্লাইটে মারা যান সব আরোহী। দু’টি বিমানই উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। এক পর্যায়ে বিমান নিরাপত্তার সনদ দেয়া ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এক জরুরি আদেশে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিশ্বব্যাপী এ মডেলের ৩৭১টি বিমান গ্রাউন্ড করা হয়।
গেলো দুবছর নানা পরীক্ষা নীরিক্ষা, ত্রুটি দূরীকরণ এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছে বোয়িং। ফেডারেল এভিয়েশনের প্রধান, মাস দেড়েক আগে জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট হবার পরেই কেবল আবারও আকাশে ওড়ার অনুমোদন মিলল বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের ।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রধান কর্মকর্তা স্টিভ ডিক্সন বলেন, এফএএ এবং আমি বিশেষত, ততোক্ষণ পর্যন্ত বিমানটিকে যাত্রী পরিবহনের অনুমোদন দেব না যতক্ষণ না আমরা, লায়নএয়ার ও ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনায় ৩৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য যেসব নিরাপত্তার বিষয় দায়ী বা চিহ্নিত সেগুলোর যথাযথভাবে সমাধান করেছি। ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর প্রতি দিন আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাদের পরিবার সম্পর্কে ভেবেছি।
এফএএ ও বিশ্বের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রায় একই সময় বোয়িং ম্যাক্স ফ্লাইটের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথে হাঁটছে। তবে মূল নিরাপত্তা সিস্টেম এমসিএএস এবং অন্যান্য পরিবর্তিত সফটওয়ারের ওপর প্রশিক্ষণ জোরদারের কথা বলছে এফএএ।
গেল বছর বোয়িং’র বিদায়ী সিইও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সামনে তার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমি আজ এখানে আসতে পারায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবং পরিবারগুলিকে সরাসরি বলছি যে সুরক্ষার প্রতি, শিক্ষার প্রতি, জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা দ্বিধাহীনভাবে প্রতিশ্রুতি দিতে চাই। এবং পুনরায় এ জাতীয় দুর্ঘটনা রোধ করার জন্যও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা।
সর্বশেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১৪:৩৩
পাঠকের মন্তব্য