শ্রম আইনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৌদি প্রবাসীদের জন্য

শ্রম আইনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৌদি প্রবাসীদের জন্য
শ্রম আইনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৌদি প্রবাসীদের জন্য

সৌদি প্রবাসীদের জন্য শ্রম আইনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এলো নতুন শ্রম আইনে। নতুন এই শ্রম আইনে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিসহ নানাবিধভাবে উপকৃত হবে প্রবাসী শ্রমিকরা। এখন থেকে চুক্তির মেয়াদ উর্ত্তীণ হলেই মালিকের অনুমতি ছাড়াই ইচ্ছামত নতুন কাজ করতে পারবেন প্রবাসীরা। এছাড়াও পরিবর্তিত আইনে এক্সিট এবং রিএন্ট্রি, এবং ফাইনাল এক্সিট ভিসা ইস্যু করার জন্য মালিকপক্ষের অনুমতির দরকার হবে না। 

সৌদি প্রবাসীদের জন্য শ্রম আইনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে সৌদির শ্রম আইনে, নতুন এই আইনে খুশি সৌদি প্রবাসী শ্রমিকরা।নতুন আইনে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেই প্রবাসীরা মালিকপক্ষের অনুমতি ছাড়াই নতুন কাজ করতে পারবেন

আরব নিউজের উদ্ধৃতি থেকে বলা হয়েছে, নতুন আইনকে ইতিমধ্যে স্বাগত জানিয়েছে সৌদির প্রবাসী কর্মীরা। তারা জানিয়েছে, শ্রম আইনের এই সংস্কারের ফলে প্রবাসী কর্মীরা আরো উপকৃত হবে এবং তাদের কাজের ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

এর আগে, গত ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে প্রচলিত শ্রম আইন পরিবর্তন করার কাজ শুরু করে মন্ত্রণালয়। এরফলে ৭০ বছরের পুরনো কাফালা প্রথা বাতিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এছাড়াও পরিবর্তিত আইনে এক্সিট এবং রিএন্ট্রি, এবং ফাইনাল এক্সিট ভিসা ইস্যু করার জন্য মালিকপক্ষের অনুমতির দরকার হবে না।

এখন থেকে সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়ের পোর্টাল এবং কিউইয়া অনলাইন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে এই সেবাগুলো প্রদান করবে সৌদি সরকার। প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরত সকল প্রবাসী কর্মীরাই এই অ্যাপ এবং পোর্টাল এর মাধ্যমে এসকল সুবিধা লাভ করতে পারবেন।

তবে, ৫ ধরণের প্রবাসী কর্মচারীরা এই সুবিধার আওতায় পড়বেন না। তারা হচ্ছেন- প্রাইভেট ড্রাইভার, দ্বাররক্ষক, গৃহস্থালী কর্মী, রাখাল, এবং মালী অথবা কৃষক।

তবে, এক্সিট এবং রিএন্ট্রি ভিসার জন্য প্রস্তুত এই সার্ভিস এর মাধ্যমে প্রবাসী কর্মচারী শুধুমাত্র ডিজিটালি মালিকপক্ষকে অবগত করেই ভিসা ইস্যু করতে পারবেন। এছাড়াও, কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ার পর বা মেয়াদের মাঝেই চুক্তি বাতিল করা সাপেক্ষে পোর্টাল এর মাধ্যমে ফাইনাল এক্সিট ভিসার আবেদন করে সৌদি আরব ত্যাগ করতে পারবেন প্রবাসী কর্মচারী।

এছাড়াও, শ্রম আইনে আসন্ন আরেকটি পরিবর্তন হচ্ছে, চাকুরীর চুক্তির মেয়াদ পার হওয়া সাপেক্ষে কোন প্রবাসী কর্মচারী মালিকপক্ষের অনুমতি ছাড়াই নিজের ইচ্ছামতো নতুন চাকুরীতে যোগ দিতে পারবেন।

আরব নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবে অবস্থিত ইমরোজ আবদুল রহমান নামের এক ভারতীয় প্রবাসী জানিয়েছে,” আমি গত ৫ বছর যাবত সৌদিতে আছি। এর মাঝে এটাই সবচেয়ে সেরা সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য। এই সিদ্ধান্তে আমি আনন্দিত।”

আবদুল রহমান আরো বলেন, “আমার মনে আছে চার বছর আগে, যখন আমি আমার আগের নিয়োগকর্তাকে ছেড়ে অন্য পরিবারের জন্য কাজ করতে যেতে চাইছিলাম, তখন খুব জটিল একটি পক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছিল। এই পক্রিয়া সম্পন্ন করতে কয়েকমাস সময় লেগেছিল আমার, যা ছিলো খুব কষ্টের এবং ক্লান্তিকর।”

তিনি আরও যোগ করেছেন, “এটি একটি দুর্দান্ত সিদ্ধান্ত এবং এটির ফলে মালিক শ্রমিক সম্পর্কের অনেক উন্নতি ঘটবে। যা অনেক প্রবাসী শ্রমিককে সহায়তা করবে। আমি কোথায় কাজ করব, সেটা এখন থেকে আমার ইচ্ছানুযায়ী হবে। আমি আনন্দিত এবং এর ফলে আমার মতো লোকেরা ভবিষ্যতে আরও উপকৃত হবে।”

তবে সৌদি আরবের তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার চেয়ারম্যান আবদুল ঘানি আল-আনসারী বলেছেন,  নতুন এই আইনে বেসরকারী খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। তিনি নতুন আইনকে ভিশন ২০৩০ এর উদ্দেশ্যে প্রণোদিত বলেও উল্লেখ করেছেন।

তবে সৌদি আরবের শ্রম আইনের নতুন এই সংস্কারের ফলে প্রায় ১০ লক্ষাধিক প্রবাসী কর্মী লাভবান হবে বলে আশা করছেন আবদুল ঘানি। এরফলে প্রতিযোগিতামূলক এবং ন্যায্য কাজের পরিবেশ জোরদার হবে বলেও জানান তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি।

সর্বশেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২১, ১৯:২১
Desk
এড্যমিন

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও