লন্ডনে কি ঘটেছিল বৃহস্পতিবারের কাতার এয়ারওয়েজের ঢাকাগামী ফ্লাইটে? সেদিন বাংলাদেশে যাওয়ার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে এয়ারপোর্টে উপস্থিত কয়েকজন যাত্রীকে বোর্ডিং পাস না দিয়ে ফেরানো হয়েছে, যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় চলছে বৃটিশ-বাংলাদেশ কমিউনিটিতে। এ নিয়ে নানা রকম সংবাদ প্রচার হচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে নিজস্ব একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম-এর পক্ষে হাই কমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) আশিকুন নবী চৌধুরীর ২৪শে জুলাই ডেটলাইনে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির সমাপ্তি টানা হয়েছে এই বলে, “বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন জানাতে চায়, বৃটিশ-বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের কয়েকজন যাত্রীকে কাতার এয়ারওয়েজর বোর্ডিং পাস না-দেয়ার বিষয়টি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনামাত্র।
এর সঙ্গে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন কর্তৃক সত্যায়িত বাংলাদেশি ও বৃটিশ-বাংলাদেশি দৈত্ব নাগরিক যাত্রীদের দেয়া স্বাস্থ্য বিষয়ক ঘোষণাপত্রের গ্রহণযোগ্যতার অথবা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিমান যোগাযোগ অব্যাহত থাকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।” এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধও জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি মতে, “বৃহস্পতিবার ২৩শে জুলাই কাতার এয়ারওয়েজ লন্ডন থেকে ঢাকাগামী বৃটিশ-বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের কয়েকজন যাত্রীকে কোনো কারণে বোর্ডিং পাস দেয়নি বলে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে (আজ) যে খবর প্রচারিত হয়েছে তা বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডনের বক্তব্য নিম্নরূপ: বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন গত মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশগামী বাংলাদেশি ও বৃটিশ-বাংলাদেশি দৈত্ব নাগরিক (এনভিআরসহ) যাত্রীদের দেয়া স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি ঘোষণাপত্র সত্যায়ন করে দিচ্ছে। এ সত্যায়িত ঘোষণাপত্রটি নিয়ে বাংলাদেশগামী যাত্রীরা বাংলাদেশ বিমান, কাতার এয়ারওয়েজ ও এ্যামিরেটস এয়ারওয়েজসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে গত মার্চ ও জুন-জুলাই মাসে বাংলাদেশে গিয়েছেন এবং এ সত্যায়িত ঘোষণাপত্রটি বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ও ঢাকা বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছেও গৃহীত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার কাতার এয়ারওয়েজ হঠাৎ করে কী কারণে বৃটিশ-বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের কয়েকজন যাত্রীকে বোর্ডিং পাস দেয়নি, বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন সে বিষয়ে কাতার এয়ারওয়েজের স্থানীয় অফিসের কাছে জানতে চেয়েছে।
ইতিমধ্যে অন্যান্য এয়ারলাইন্স কোভিড সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সনদের জন্য নতুন কোন নীতিমালা গ্রহণ করেছে কিনা সে বিষয়েও হাই কমিশন তথ্য সংগ্রহ করছে। যথাসময়ে হাইকমিশনের ওয়েবসাইট ও ফেইসবুকের মাধ্যমে সেসব তথ্য সবাইকে জানানো হবে।
এছাড়া বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন বিমান যাত্রীদের পরামর্শ দিচ্ছে যে, যারা কাতারসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশে যেতে ইচ্ছুক তারা যেন টিকেট ক্রয়ের সময় নিজ দায়িত্বে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স থেকে যাবতীয় শর্তাবলী যথাযথভাবে জেনে নেন যাতে ভ্রমণের সময় তাদের কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।
উল্লেখ্য, কিছু সংবাদ মাধ্যম লন্ডন হাই কমিশন ‘হেলথ সার্টিফিকেট’ ইস্যু করেছে বলে যে খবর প্রচার করেছে, তা সঠিক নয়। হাই কমিশন থেকে কোনো যাত্রীকে এধরনের হেলথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়নি। শুধুমাত্র বাংলাদেশগামী যাত্রীদের নিজস্ব স্বাস্থ্য বিষয়ক ঘোষণাপত্র সত্যায়ন করে দেয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং এ সত্যায়িত ঘোষণাপত্র নিয়ে যাত্রীরা বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে আগের মতোই ভ্রমণ করছেন।
সর্বশেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০, ১৬:০৮
পাঠকের মন্তব্য