গত দুই মাসে ১৪ হাজার পাসপোর্ট বিতরণ করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। এছাড়া গত জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত ডাকযোগে পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে ৩৪ হাজার। গত ২৭ মে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিশেষ ব্যবস্থায় সীমিত আকারে পাসপোর্ট বিতরণ শুরু করে।
সে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪শ’ পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়। চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মালয়েশিয়ায় মুভমেন্ট কন্ট্রোল ওয়ার্ডার (আর এমসিও) কার্যকর রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া সরকার প্রদত্ত সকল নিয়ম-কানুন/বিধি নিষেধ সতর্কতা মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১৬৬ জালান বেসার, পেকান আম্পাং এ অবস্থিত হাইকমিশন অফিস থেকে এ সেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রধান কাউন্সিলর মো. মশিউর রহমান তালুকদার।
তবে মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেয়া আরএমসিওর ঝৃঁকির মধ্যে এসওপি মেন্টেইন করে সীমিত থেকে ব্যাপক পরিসরে বর্তমানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬শ’ জনকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলে এ প্রতিবেদককে জানান তিনি।
এর আগে, গত ১৯ মে হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে পাসপোর্ট বিতরণ সংক্রান্ত শর্তাবলি ডেপুটি হাইকমিশনার ও দূতালয় প্রধান ওয়াহিদা আহমেদ স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে, হাইকমিশনে আগমনের সময় অবশ্যই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করতে হবে। অসুস্থ অবস্থায় থাকলে হাইকমিশনে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সর্বক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এছাড়া, পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য ০১৬২৭৪৭৯১৭, ০১৭৬০১৪৪৮৪, ০১১৬১৯৯৪১৩২ ও ০১১৬৪৩৮৬৭৪৮ নম্বরে ফোন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এই সময়ে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট নেওয়ার তারিখ ও সময় জানিয়ে দেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পূর্বে অফিসে আসতে হবে।
পাসপোর্ট সংগ্রহের নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় ব্যতীত অর্থাৎ অ্যাপয়েন্টমেন্ট ব্যতীত কাউকে অফিসে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া উল্লিখিত নম্বরগুলোতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা ৩০টা পর্যন্ত (ছুটির দিন ব্যতীত) ফোন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
উল্লিখিত চারটি নম্বরে ফোন করেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারছেন না। এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত শতশত ফোন আসছে। একজন কল করছেন, আর দায়িত্বরতরা কল রিসিভ করবেন না এমন সুযোগ নেই। কারণ হাইকমিশনারের নির্দেশে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনিটরিং করছেন। রিসিভ কলের মাধ্যমে ডেলিভারির তারিখ জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া সরকার ব্যাপক জনসমাগমের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। এ নিয়ম ভঙ্গ করা হলে এদেশের সরকার তথা পুলিশ কর্তৃক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে।
পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে কী করণীয় এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার প্রধান কাউন্সিলর মো. মশিউর রহমান তালুকদার জানান, রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে কোনো তথ্য পরিবর্তন না থাকলে স্ব-শরীরে হাইকমিশনে আসার প্রয়োজন নেই। ১৯ মে এ সংক্রান্ত এক নোটিশে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, আর যদি পরিবর্তন এবং ১ম বারের মতো বাচ্চার পাসপোর্ট করতে হয় তবে হাইকমিশনে আসতে হবে। আর এমসিও চলাকালীন মালয়েশিয়ার ডাকযোগে এই সেবা গ্রহণ করা যাবে। তবে সঠিকভাবে পূরণকৃত রি-ইস্যু ফরম, এবং হাইকমিশনের নির্ধারিত মে ব্যাংকের ৫৬৪৪২৭১০২২৬৮ এ একাউন্ট নম্বরে ফি প্রদানের পর মূল রশিদ (হলুদ রংয়ের পেমেন্ট স্লিপ), পুরনো পাসপোর্ট ও ভিসার স্পস্ট ফটোকপি এবং রি- ইস্যু আবেদন ফর্মে আবেদনকারীর স্বাক্ষর যুক্ত পূর্ণাঙ্গ ফাইল বাংলাদেশ হাইকমিশনের ঠিকানায় Bangladesh High Commission, Lot .5B & 5C ( Lot No. 9 & 10 ), Jalan Sultan Yahya Petra , 54100 Kuala Lumpur, Malaysia.
রেজিস্টার্ড ডাকযোগে প্রেরণ করতে হবে। পূরণকৃত পূর্ণাঙ্গ ফাইলের ১ সেট ফটোকপি কাছে রেখে দিতে হবে। তবে চাহিদাকৃত কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট অস্পষ্ট বা অসম্পূর্ণ হলে আবদেনপত্র বাতিল করা হবে। এছাড়া যাদের আবেদনে ত্রুটিপূর্ণ দেখা যায় সাথে সাথে মিশনের ফেসবুক পেইজে জানিয়ে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে সংশোধনের মাধ্যমে আবেদন জমা নেয়া হয়। এদিকে করোনাকালে প্রথম দিকে ডাক যোগে প্রতিদিন প্রায় ১৫ শ আবেদন জমা পড়েছে। এরপর বাড়তে থাকে আবেদন। বর্তমানে প্রতিদিন দুই হাজারেরও অধিক অবেদন জমা পড়ছে বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।
সর্বশেষ আপডেট: ৪ আগস্ট ২০২০, ০৯:৫৫
পাঠকের মন্তব্য